পথ চলাতেই আনন্দ

ভালোবাসা কি? জালালউদ্দিন রুমি থেকে ধার করে বলি, কারোর সাথে পৃথিবীর প্রতিটা জিনিষের সেতু-বন্ধনটাই ভালোবাসা। এর পর কেউ যদি প্রশ্ন করে, আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেতু-বন্ধন কিংবা ভালোবাসার মানুষটা কে? উত্তরে বলবো; আমার চোখে সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ ও আনন্দে ভরা ভালোবাসার আপনজনটা হলো আমার জীবন-সঙ্গিনী, আমার বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা-- আমারই প্রিয়তমা-অর্ধাঙ্গিনী। এইবার যদি জানতে চাওয়া হয় এতো গুণের অধিকারিণীকে আমি কবে খুঁজে পেয়েছি; তা হলে আমি বলবো সম্পর্ক তো সেই জন্ম-জন্মান্তরের! সাথে আরও যোগ করবো, ইহকালে আমাদের একসাথে পথ চলাটাও নেহায়েত কম সময়ের না। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দশ তারিখে তিরিশ বছর পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু মনে হয় এই তো সেই দিন। আড়াই যুগ আগের প্রত্যেকটা কথা ও ঘটনা আজও আমার স্মৃতির অমূল্য ভাণ্ডারে জ্বল জ্বল করে চলেছে। তবে এইটা ঠিক এই তিন দশকের পথ চলায় উত্থান-পতন, সংকটের কোনো কমতি হয়নি। তারপরেও আমরা একে অপরকে আঁকড়ে রেখেছি; দুঃসময় পারি দিয়েছি। একসাথে সন্তুষ্টির হাসি হাসতে পেরেছি।

কেউ যদি আমাকে বলে বিয়ে করলে ভালোবাসা থাকে না, তাদেরকে আমি বলতে চাই, যে সোনা আগুনে যতো পুড়েছে, সেই সোনা ততো বেশী খাঁটি হয়েছে। সেইজন্য এই কথা হয়তো বলতেই পারি, আমাদের ভালোবাসা এখন খাঁটি সোনার মতই পোক্ত। তবে সংসার পরিচালনা ও চার সন্তানকে লালন-পালন করার সিংহ ভাগ কৃতিত্ব প্রিয়তমাকেই দিতে চাই। আমার উদাস লেখক মন অনেক ক্ষেত্রে বস্তুগত বিষয়গুলোর প্রয়োজনীয় গুরুত্ব ধরতে পারে না। এরকম ক্ষেত্রে প্রতিবারই সে এগিয়ে এসে আমার কমতিকে সামাল দিয়েছে। আমাদের যাত্রা-পথ মসৃণ করেছে। শেষে এই কথাটা নির্দ্বিধায় বলি, পরিস্থিতি যাই হউক না কেনো, এখন আমার পথ চলাতেই আনন্দ।

ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৮

কাজী হাসান