চল্লিশ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় বিবাহ…......

বনিবনা হচ্ছে না।

বিয়ের আগের পাঁচ বছরের প্রেম আর তিন বছরের ঘর সংসার। কাজল, অহনা এখন একজন আরেকজনকে সহ্য করতে পারছে না। পৃথিবীর সব চেয়ে ছোট কারণেও একজন আরেকজনকে আক্রমণ করছে। অন্য পক্ষকে উচ্চস্বরে আঘাত করাটা ওদের প্রিয় কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজকের ছুটির দিনের কলহ খুবই সামান্য কারণে লাগল। আগের দিন সন্ধ্যায় অহনা কাজলকে বলেছিল, ছাদের থেকে কাপড় নিয়ে আসতে। কাজল বলেছিল, সে নিয়ে আসবে। কিন্তু, ঠিক সেই সময় ফোন করলো, ছোট বেলার বন্ধু রিপন। এক সাথে ক্লাস ফাইভ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়েছিল। পরে রিপন এমেরিকা চলে যায়। প্রায় দশ বছর পরে কথা হচ্ছে। এর মধ্যে রিপন কয়েকবার দেশে আসলেও, কাজলের সাথে যোগাযোগ হয় নি। এই কথা, সেই কথায় কিভাবে যে ঘণ্টা কেটে গেল বুঝতেই পারল না। অহনা এসে তাড়া না দিলে আরও কিছুক্ষণ কথা বলা যেত। অহনার খালার বাসায় ওদের রাতে দাওয়াত। রিপন মাত্র তার শ্বেতাঙ্গিনী বউকে নিয়ে বলতে আরম্ভ করেছিল।

কাজল ফোন রেখে তাড়াহুড়া করে রেডি হতে চলে গেল। বেমালুম ভুলে গেল ছাদের থেকে কাপড় আনার কথা।

অহনা ভোর বেলা উঠে ছাদে গেল টবের ফুল গাছের পরিচর্যা করতে। যেয়েই আবিষ্কার করলো, কাজল কালকে সন্ধ্যায় কাপড় উঠায় নি। সাথে সাথে মাথায় রক্ত চলে আসলো। কাজলটা ইদানীং কোন কথাই শুনছে না। আবার সুযোগ পেলেই, এটা সেটা বলে খোটা দিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে দেয়।

অহনা বকতে বকতে কাজলের ঘুম ভাঙ্গাল। কালকে রাতে ফিরতে বেশ দেরি হয়েছিল। তার পরে যেহেতু অফিস নাই, কাজল একটা হিন্দি ছবির অর্ধেক শেষ করে তার পরে শুতে গেল। প্ল্যান ছিল দুপুর বারটা পর্যন্ত ঘুমানোর। প্রথমে বুঝতে পারল না, অহনা কি নিয়ে এতো হৈ চৈ করছে। যখন বুঝল বিষয়টা, তখন মনে হল নিশ্চয়ই সব কাপড় চুরি হয়ে গেছে। কিন্তু, যখন শুনল কাপড়, কাপড়ের জায়গাতেই আছে। তখন কাজল তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। একটাও কাপড় খোয়া যায় নি, তার পরে এতো বকা ঝকা করার কি আছে। চিৎকার করে বলে উঠলো, কোন খুশিতে যে তোমাকে বিয়ে করেছিলাম। এখন একেবারে নরকে বসবাসের অবস্থা। শান্তিতে ঘুমানো পর্যন্ত যাবে না।

অহনা উত্তরে বলল, কি, কি বললে? নরকে বসবাস। তোমার নরকে থাকার আর দরকার নাই। তোমার সাথে আমি আর থাকব না। আমি আজকেই চললাম। জান কত ছেলে আমাকে বিয়ে করার জন্যে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আমি যেয়ে তোমাকে ডিভোর্সের কাগজ পাঠাব। আমি দেখতে চাই, কয়টা ধানে কয়টা চাল।

কাজল চিৎকার করে বলল, যাও, যাও। খুব জানা আছে। মোল্লার দৌড় কতটুকু? তিন দিনের মাথায় ঠিকই ফিরে আসবে।

অহনা এ রকম উত্তরের জন্যে প্রস্তুত ছিল না। কাজলের কথায় শরীরটা রি রি করে উঠলো। কাঁদতে কাঁদতে বলল, এই গেলাম। চল্লিশ দিনের মাথায় আরেকটা বিয়ে করে দেখিয়ে দেব।

আজ সাত দিন হয়ে গেছে। কাজলের কাছে মনে হচ্ছে সাত শ বছর। মনে করেছিল, অহনা হয়তো দু-তিন দিনের মধ্যে ফিরে আসবে বাবার বাসা থেকে। সারাক্ষণ মনে হচ্ছে, ওকে যেয়ে বাবার বাসা থেকে রাগ ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আসতে। কিন্তু, তা হলে তো হার মানতে হয়। ভবিষ্যতে আরও বেশী বকা ঝকা খাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কাজলের মনে একটা ভয় চলে আসলো। অহনা মাথা গরম করে আবার অন্য কিছু না করে ফেলে। শাসিয়ে গেছে ডিভোর্স করবে। যদি সত্যি সত্যি কাগজ পত্র পাঠিয়ে দেয়। তা হলে কি কিছু করার থাকবে। ভাবতে ভাবতে মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। অফিসের কাজে মন বসাতে পারল না। গত তিন দিন ধরে কাজে যায় নি। জানিয়ে দিয়েছে সে অসুস্থ।

কি করা যায়, কি করা যায় ভাবতে ভাবতে সোমার কথা মনে পরলে। অহনার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ফোন করলো সোমাকে। এ কথা সে কথা বলার পরে, অহনার প্রসঙ্গ তুলল। নিজের সব দোষ স্বীকার করে বলল, প্লিজ অহনাকে বুঝিয়ে শুঝিয়ে বাসায় আনিয়ে দেন না। সোমা সেই সময় কিছুটা ব্যস্ত ছিল। কিছুক্ষণ পরে একটা মিটিং। বলল, বিকালে অহনার সাথে কথা বলবে। তার পরে কাজলকে ফোন করে জানাবে।

কাজলের সময় যেন কাটে না। সেই বিকাল হতে এখনও তিন ঘণ্টা বাকি। হিন্দি ছবি, ফেসবুক—কোনটাতেই মন বসাতে পারলো না। অস্থিরতার মধ্যে একটা তন্দ্রার মত হল। তার মধ্যে ভীষণ একটা স্বপ্ন দেখা আরম্ভ করলো।

অহনা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছে আগামী তেত্রিশ দিনের মধ্যে বিয়ে করবে। তেত্রিশ জন ছেলে ইন্টার্ভিউ দিতে এসেছে। একেবারে আধুনিক স্বয়ংবরা সভা। অহনা সবার সাথে একেবারে গায়ের সাথে লেগে হেসে হেসে কথা বলছে। মুখের থেকে হাসি যাচ্ছেই না। কিছুক্ষণ পরে, এক এক করে সবার ইন্টার্ভিউ নিবে। ঘুমের মধ্যেই কাজলের পিত্তি জ্বলতে লাগল। হার্ট বিট বেড়ে ডবল হয়ে গেল। বুকটা ধড় ফড় করতে লাগল। মনে হল, হৃদপিণ্ডটা ছিটকে বেরিয়ে আসবে।

এ রকম সময়ে ফোনটা বেজে উঠলো। সোমা কল করেছে। বলল, ভাইয়া খবর ভাল না। অহনা এখনো রেগে টং হয়ে আছে। পরিষ্কার বলে দিয়েছে সে ফিরে আসবে না। সে যা বলেছে, তাই করবে। শুধু এতটুকুই বলল আপনাকে জানাতে, চল্লিশ দিনের সাত দিন পার হয়ে গেছে।

কাজল চিন্তাই করতে পারে না, অহনা রাগ করে যেয়ে আরেক জনকে বিয়ে করতে পারে। কিন্তু, অহনা একটা রগচটা মানুষ। আশঙ্কাটা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। কথাটা আসলে সত্যি, এক সময় কত ছেলে তাকে বিয়ে করার জন্যে এক পায়ে খাড়া ছিল। অহনা দেখতে শুনতে মোটামুটি আগের মতই আছে। কাজলের কাছে মনে হয়, ওর রূপ দিনে দিনে বেঁড়েই চলেছে। একটা ছেলে খুঁজে পাওয়া অহনার জন্যে কোন ব্যাপারই হবে না।

চল্লিশ দিনের মধ্যে অহনা আরেক ছেলেকে বিয়ে করে ফেললে কাজলের কি অবস্থা হবে। কারোর সামনে কি মুখ দেখানোর উপায় থাকবে। ওরা যখন বাসায় কাওকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিল, সুরুজ মামা খুব ভেঙ্গিয়ে বলেছিল, বিয়ে নিঃশব্দে হলে, সেই বিয়ে বেশী দিন ঠিকে না। ওই সব বিয়ে অল্প সময়ে নীরবেই শেষ হয়ে যায়। আরও অনেকের টিটকারি দেয়া কথা সব মনে আসতে থাকলো। ওই সব মানুষদের কথা ঠিক প্রমাণিত হলে, কাজলের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।

ভাবতে ভাবতে অস্থির হয়ে পড়লো। কি করা যায়? কি করা যায়? কোন বন্ধুর সাথে আলাপ করলে, সে তো একটা হাসির পাত্রে পরিণত হবে। কয় দিন আগে অফিসের কলিগ নুরুলের কাছে শুনেছিল, বাংলাদেশে অনলাইন ম্যাচ মেকিং সার্ভিস চালু হয়েছে। এক হাজার টাকা দিয়ে মেম্বার হতে হয়। অনলাইনে প্রোফাইল জমা দিতে হয়। সেখানে জানাতে হয় কেমন পাত্র-পাত্রী খোঁজা হচ্ছে। আর বিশেষ কোন চাহিদা আছে কি না। যারা ইন্টারনেট তেমন একটা ব্যাবহার করে না, তারা কোম্পানির অফিসে যেয়ে তাদের মেম্বার-শিপ করে আসতে পারে। যখন দু পক্ষের চাহিদাগুলো মিলে যাবে, কিংবা কমপক্ষে ৯৫% মিলবে, তখন দু পক্ষের সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হবে কোম্পানি। সে জন্যে তাদের অফিসের স্পেশাল রুমের ব্যবস্থা আছে। সেই সময়ে আবার আরও পাঁচ শো টাকা দিতে হবে। বিয়ে পর্যন্ত গড়ালে, কোম্পানি ২৫০ টাকার একটা গিফট দিবে। কিন্তু তখন শর্ত থাকবে একটা, কোম্পানি তাদের বিজ্ঞাপনে পাত্র-পাত্রীর ছবি ব্যাবহার করতে পারবে।

যত দিন যাচ্ছে অহনার রাগ তত বাড়তে লাগল। কি বে আক্কেল মানুষ। একবার কাজল যদি আসত, তা হলে সে তো বাসায় ফিরে যেত কোন শর্ত ছাড়াই। কি খাচ্ছে, কি করছে কে জানে। কোন দিন কোন কাপড় পরে অফিসে যাবে, তাও অহনাকে ঠিক করে দিতে হয়। রাতে ঘুমালে গায়ে কাঁথা থাকে না, না থাকলে আবার সকালে উঠে হাচ্চু হাচ্চু করতে থাকে। অহনা রাতে যে কতবার কাজলের গায়ে কাঁথা ঠিক করে দেয়! আবার ও, ঘুমের মধ্যে কতবার যে জড়িয়ে ধরে...। ও কি একা একা ঘুমাতে পারছে? সকালে উঠে কি হাচ্চু হাচ্চু করছে??

কাজল তো জানেই, অহনার মাথা খুব অল্পতেই গরম হয়ে যায়। আবার ঠাণ্ডা হয়ে যায় তেমন তাড়াতাড়ি। তার পরে কেমন করে এমন জঘন্য কথা বলতে পারলো। বলে কি না, নরকে বসবাস করছে! না ওকে একটা ভাল শিক্ষা দিতেই হবে। প্রয়োজনে যে কোন মূল্য দিতে প্রস্তুত। আরেকটা বিয়ে করে হলেও। অহনার বুঝল মাথাটা তার দ্রুত গরম হয়ে যাচ্ছে।

পরের দিনই অহনা অনলাইন ম্যাচিং মেকিং কোম্পানির অফিসে যেয়ে হাজির হল। দশ পাতার প্রশ্ন প্রোফাইল ফিল আপ করলো নিজের হাতে। মাথাটা বাড়ে বাড়ে গরম হয়ে যাচ্ছিল। ছেলে খুঁজে দিতে এতো প্রশ্ন করার কি আছে? তার পরেও সব প্রশ্নের উত্তর লিখল। পাঁচ পাতা প্রশ্ন নিজেকে নিয়ে। অন্য পাঁচ পাতার প্রশ্ন যাকে খোঁজা হচ্ছে, তার মধ্যে কি কি আশা করা হচ্ছে তা নিয়ে। শেষের প্রশ্নটা একেবারে ভাবিয়ে তুলল। আপনি ভবিষ্যৎ পাত্র/পাত্রীর মধ্যে বিশেষ কোন গুন কি আশা করেন ? যাই হোক ওদের একটা জিনিষ ভাল লাগল। দু পক্ষের সামনা সামনি দেখা না হওয়া পর্যন্ত, এক জনকে আরেকজনের নাম, পরিচয় কিংবা ব্যক্তিগত কোন তথ্য দেয়া হবে না।

অহনা প্রশ্নটার উত্তরে লিখল, ছেলেকে অবশ্যই মেঘের কথা বুঝতে হবে, মেঘের সাথে কথা বলতে জানতে হবে।

কাজল আর অহনার তখন বিয়ে হয় নি। প্রেম আরম্ভ হওয়ার মাত্র তৃতীয় দিন। আকাশটা খুব কালো হয়ে আসলো। কিছুক্ষণ পরে কাল বৈশাখী ঝড় আসবে। অহনা বলল, দেখ মেঘ চিৎকার করে বলছে, অহনা আর কাজলের বিয়ে হবেই। কাজল তার পরে বলল, এইবার বলছে, ওদের মধ্যে পৃথিবীর সব চেয়ে বেশী ভালবাসা হবে।

এর পর যখনই ওরা একা থাকত, সুযোগ হত, এক জন আরেক জনকে মেঘের কথা শুনাত। নীল আকাশের ভেসে যাওয়া নিঃশব্দে মেঘ থেকে আরম্ভ করে, বিদ্যুৎ চমকানো গর্জানো আকাশের মেঘ; সব মেঘের কথাই তারা একে অপরকে বলতে। কাজল চাকরির ইন্টার্ভিউ দিয়ে আসার পরে চিন্তিত হয়ে বসে ছিল। অহনা এসে বলল, শুনো শুনো মেঘ বলছে তোমার চাকরিটা হয়ে যাবে। টেনশনের কিছু নাই। এই কথার ঘণ্টা খানিক পরে, বহুজাতিক কোম্পানির পার্সোনাল ম্যানেজার সাহেব ফোন করে জানালো, কংগ্রাচুলেশান, আমরা আপনাকে চাকরি অফার করছি। মাসে বেতন, চল্লিশ হাজার টাকা।

জীবনের প্রথম চাকরি, এতো টাকার বেতন। খবরটা সবার আগে আসলো আবার মেঘ থেকে। দু জনে আনন্দে লাফানোর অবস্থা। আরেকবার, কাজল বলল, তুমি এম এ পরীক্ষায় ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হবে। অহনা জানতে চাইল, তুমি জানলে কি করে। উত্তরে কাজল বলল, এইতো আকাশের মেঘ বলল। পরীক্ষার রেজাল্ট যখন বের হল; আবার দেখা গেল মেঘের কথাই সত্যি।

ব্যস্ততা বাড়া আর দিন গড়ানোর সাথে সাথে অহনা, কাজলের, মেঘের সাথে কথা বলা কমতে থাকলো। তার পরেও, কোন অনিশ্চয়তা আসলেই দু জন আকাশের মেঘের দিকে তাকিয়ে থেকেছে। কান পেতে শুনতে চেষ্টা করেছে মেঘ কি বলছে। না জানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেয়েছে।

দু সপ্তাহ কেটে গেল। কোন খবর আসলো না। অনলাইন ম্যাচ মেকিং কোম্পানিটা কি ভুয়া না কি? বাংলাদেশে সাড়ে সাত কোটি পুরুষ আছে, তার মধ্যে থেকে তার সাথে মানায়, এমন এক জনকে বের করতে পারছে না। শুধু বাড়তি একটা চাহিদা, মেঘের ভাষা জানতে হবে। বাকি সব চাহিদা তো একে বারেই সাধারণ। লম্বা, চরিত্রবান, ধর্ম পরায়ণ---এ গুলো কত মানুষের মধ্যেই থাকে!

পনের দিনের মাথায়, অনলাইন ম্যাচ মেকিং কোম্পানি থেকে কল আসলো। ম্যানেজার সাহেব নিজে কল করেছে। বলল, ম্যাডাম, আপনি আমাদের একটা কঠিন সমস্যায় ফেলে দিয়েছিলেন। আমারা অনেক কষ্টে এক জন মানুষ খুঁজে পেয়েছি, যে বলছে সে মেঘের ভাষা বুঝে। শুধু তাই না, আপনি প্রোফাইলে যা যা চেয়েছিলে, তার সব ভদ্রলোকের সাথে মিলে গিয়েছে। একেবারে ১০০% ম্যাচ। আপনার সময় থাকলে কালকে বিকাল পাঁচটায় আমাদের অফিসে চলে আসেন। আপনার সাথে, আমি, ভদ্রলোকের পরিচয় করিয়ে দিতে পারি।

অহনা সাথে সাথে রাজী হয়ে গেল। কাজলকে কি মনে করে নিজেকে? পৃথিবীর আর কোন ছেলে মেঘের ভাষা জানে না। হিসাব করতে লাগল, চল্লিশ দিন থেকে আর কয় দিন বাকি আছে। আগামী কাল যার সাথে দেখা হবে, তাকে মানানসই মনে হলে; ডিভোর্সের কাগজ পত্র ফাইনাল করে ফেলতে হবে। কাজলের জন্যে একটা করুণা ভাব চলে আসলো। বে- চা-রা ।

কাজল অনলাইন ফর্ম ফিল আপ করলেও, ‘সাবমিট’ এ চাপ দিতে খুব দ্বিধা, দ্বন্দ্ব হচ্ছিল। যদি অহনা ফিরে আসে। কিন্তু, গত দু সপ্তাহে কোন যোগাযোগ পর্যন্ত করলো না। এর মধ্যে আবার সোমাকে বলেছে, চল্লিশ দিনের মধ্যে কাজটা করে দেখাবে।

শেষে কাজল গত রাতে কাজটা করলো। “সাবমিট” এ ক্লিক করলো। তার আগে, কিছুক্ষণ আকাশের মেঘের সাথে কথা বলে নিলো। মেঘ একেবারে স্পষ্ট করে বলল, এখনই ‘সাবমিট” ক্লিক করো। দু সপ্তাহ অপেক্ষা করার তো কোন দরকার ছিল না।

কাজী হাসান

জুলাই ১৭, ২০১১

www.lekhalekhi.net