ওপেনটি বায়োস্কোপ

জানে আলম ব্যাপারীর মুখের হাসি যাচ্ছেই না। কিন্তু রাশ ভারী ব্যাপারী সাহেবের মুখে কয়েক দিন আগে পর্যন্ত, মুখে হাসি দেখার কথা কেও ভাবতেই পারত না। অনেকটা অমাবস্যার চাঁদ দেখার মত। সারাক্ষণ একে বকা, ওকে ঝকা করছেন। সবার থেকে শুধু টাকার হিসাব চেয়ে বেড়াচ্ছেন। অফিসে থাকলে কর্মচারীদের সামনা সামনি, আর বাসায় কিংবা রাস্তায় থাকলে ফোনে ঠিক মত হিসাব দিতে না পারার জন্যে শাসাচ্ছেন।

বেশ কয়েক মাস চিন্তা আর সাধ্য-সাধনার পরে সমস্যার সমাধান পেয়ে গেছেন। তিনি এখন জানেন কি করলে দেশ জুড়ে তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে। দেশের বাইরেও বাঙালিরাও তাকে নিয়ে কথা বলবে। পত্র পত্রিকায় ছবি, ইন্টারভিউ বের হবে। রাস্তায় মানুষজন তাকে দেখলে গুঞ্জন তুলবে, অবাক হয়ে তাকাবে। বিষয়গুলো ভাবতেই মনটা বারে বারে চাঙ্গা হয়ে উঠছে। সেটা ফুটে উঠছে মুখে হাসির আকারে। শত চেষ্টা করেও গম্ভীর থাকতে পারছেন না।

জানে আলমের উত্থান আরও বেশ কিছু রাজনীতিবিদ ব্যাবসায়ির মত। ছোট জেলা শহরে মাস্তান হিসাবে বেশ নাম ডাক ছিল। ভাংচুর, চাঁদা, হুমকি দেয়ার ব্যাপারে তাকে সবার আগে দেখা যেত। জানে আলমের নাম শুনলে বুক কেঁপে উঠত না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুস্কিল ছিল। সেই সময়ে তার নামে বেশ কিছু মানুষ খুনের মামলাও হয়েছিল বলে শোনা যায়। কিন্তু কোন মামলাই কোর্ট পর্যন্ত গড়ায় নি। পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়ার ব্যাপারে তাল বাহানা করত। বাধ্য হয়ে মামলা নিলেও, দেখা যেত স্বাক্ষী দেবার মানুষ পাওয়া যেত না। কার ঘাড়ে কয়টা মাথা যে তার বিরুদ্ধে কথা বলবে।

এক বার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসলেন জেলা শহর সফর করতে। জানে আলমের দুঃসাহসিক সাহসের কথা শুনে সাথে সাথে তলব করলেন। দু জনের খাতির হয়ে যেতে সময় লাগলো না। মন্ত্রী বললেন, তোমার মত প্রতিভা আমার দরকার রাজধানী ঢাকায়। তুমি যেয়ে আমার সরকারী বাসায় উঠবে।

মাস খানেকের মধ্যে মফঃস্বল শহরের পর্ব চুকিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাসায় যেয়ে উঠলেন। এক সপ্তাহের মধ্যে রাজধানীর রাজনীতি আর মাস্তানি জগতের সব হর্তা কর্তার সাথে পরিচয় হয়ে গেল। অল্প দিনের মধ্যে তার জাতীয় খ্যাতি চলে আসল। তার কিছু দিন পরে বিরোধী দলের পত্রিকাগুলো সংবাদ বের করলো, মফঃস্বলের ত্রাস এখন ঢাকার মাফিয়াদের প্রধান নেতা। আয় রোজগার বেড়ে গেল শত গুন। আশে পাশের সাঙ্গ পাঙ্গরা তাদের বড় বড় কমিশন পেয়ে মহা খুশী। মন্ত্রী সাহেব বিদেশ থেকে অর্ডার দিয়ে কাল রঙের একটা গাড়ি ট্যাক্স ছাড়া আমদানি করে দিলেন। সাথে আবার দু জন সার্বক্ষণিক বডি গার্ড আর একজন ড্রাইভারের ব্যাবস্থাও করলেন।

পত্র পত্রিগুলো খবর পেয়ে গেল, জানে আলম আলমের সাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সখ্যতার কথা। কানা ঘুষা চলতে থাকল। শোনা যায়, এক বিদেশী রাষ্ট্রদূত প্রধান মন্ত্রীর কাছে বিষয়টা জানতে চাইলেন। প্রধান মন্ত্রী নিজে পুলিশ প্রধানকে বললেন, জানে আলমকে এরেস্ট করতে।

ঘটনাক্রমে, পুলিশ জানে আলমকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাসা থেকে গ্রেফতার করলো। টিভি, রেডিও আর সব পত্রিকায় খবরটা বের হল, মন্ত্রীর বাসা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার।

জানে আলম তিন মাসের মধ্যে বের হয়ে আসলেন। তার বিরুদ্ধে কোন মামালাই দাড় করান গেল না। সেই মফঃস্বল শহরের পুনরাবৃত্তি। কেও স্বাক্ষী দেয়ার সাহস দেখাতে পারল না। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে, তিনি সাংবাদিকদের বললেন, সব মিথ্যা......... রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কিন্তু, বেচারা মন্ত্রী মহোদয় চাকরি হারালেন। বিপদে কেও তার পাশে দাঁড়াল না। প্রাক্তন মন্ত্রী মনের দুঃখে বললেন, সব নেমক হারাম খেঁক-শেয়াল। সবাই কুমিরের বাচ্চা খেয়েছে, এখন ঢোক গিলে, মুখ মুছে খালি মুখ দেখায়।

জানে আলমের বুঝতে সময় লাগলো না, মাস্তানদের সর্দার হয়ে বেশী দিন চলা যাবে না; খুব বেশী ষড়যন্ত্র। সব ধূর্ত মানুষদের আশে পাশে রাখতে হয়, আবার তাদের সবার চোখ পদটার দিকে। সামনা সামনি মিষ্টি চেহারা দেখালেও, এই মানুষগুলো যে সুযোগ পেলে পিছন থেকে ছুরি মারতে দ্বিধা করবে না, সে ব্যাপারে জানে আলম একেবারে ১০০% নিশ্চিত।

খুব অল্প সময়ের মধ্যে জানে আলম গুছিয়ে নিলেন। টেক্সটাইল, গার্মেন্টস, জাহাজ, বাস, লঞ্ছ--- সব ধরনের ব্যাবসা চালু করলেন। তবে অল্প সময়ের মধ্যে সব চেয়ে লাভ এনে দিল রিয়েল স্টেটের ব্যাবসা। হুমকি, ধামকি, ভয়- ভীতি দেখিয়ে জোর দখলের প্রক্রিয়াগুলো তার আবিষ্কার। পরে অন্যরাও, তার দেখা দেখি একই কাজ করে প্রচুর মাল পানি কামিয়েছে। তার পরে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ভুলে যাবার পুরনো বিষয়টা তাকে বলতে পর্যন্ত হয় নি। জানে আলম এখানেও নতুন মাত্রা যোগ করেছেন।

এতো কিছুর করার পরেও জানে আলমের মনে সুখ নাই। বউ, বাচ্চা, কর্মচারী থেকে আরম্ভ করে অন্য ব্যাবসায়ি, রাজনৈতিক নেতারা পর্যন্ত তার সাথে মন খুলে কথা বলে না। কেমন যেন ভয় ভয় ভাব। কিন্তু সে নিজে সরাসরি মাস্তানি ছেড়ে দিয়েছে সেই কবে। নিজেকে ব্যাবসায়ী হিসাবে ভাবতেই বেশী ভালো লাগে। পর পর দু বার হজ্ব করে ইমেজ বদলানোর চেষ্টা করেছেন লাভ হয় নি। শেষে নামের শেষে ব্যাপারী শব্দটা যোগ করে মোটা চাঁদা দিয়ে ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি হয়েছেন। তার পরেও পুরনো কুখ্যাতি তার পিছু ছাড়ে নি।

জানে আলম ব্যাপারী তার ইমেজ পাল্টানোর জন্যে উঠে পড়ে লাগলেন। খেলাধূলা, মসজিদ, মন্দির, হাসপাতালে বড় অংকের টাকা দিলেন নিজেকে জনগণের সেবক হিসাবে প্রমাণ করার জন্যে।

মহা চিন্তায় পরলেন জানে আলম। বাঙালীদের চরিত্র, চিন্তা করে মুখ থেকে একটা গালি বের হয়ে আসলো। তার পরে মনে হল, বাঙালি এগুতে জানে না; পুরনো জিনিষ নিয়ে আকড়ে পরে থাকতেই বেশী ভালবাসে। কবে সে কি করেছে, তা মনে রাখার কোন অর্থ হতে পারে না। কিন্তু, এইটা ভুলাতে না পারলে, তার অন্য পাঁচ জনের মত স্বাভাবিক জীবন হচ্ছে না। বৌ মনে হয় নিঃশ্বাস বন্ধ করে কাছে আসে। ভাব এই বুঝি, পকেট থেকে পিস্তল বের করে গুলি করে দিবে। এক মাত্র সন্তান, পনের বছরের তুলতুলে মেয়ে তুলি, বাবার দিকে মুখ তুলেই তাকায় না।

কষ্টে বুক ফাটতে থাকলো। কাওকে বুঝানোর মত মানুষ পর্যন্ত পেলেন না। ভাবতে থাকলেন একটা মানুষ যদি পাওয়া যেত আলোচনা করার জন্যে। তেমন নির্ভরযোগ্য কারোর নাম খেয়াল আসলো না। হঠাৎ , চোখে ভেসে আসলো প্রাক্তন স্ব রাষ্ট্র মন্ত্রীর চেহারা। এখনো তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ আছে। বেচারা চাকরী হারানোর পরে গ্রামে যেয়ে থাকা আরম্ভ করেছেন। জানে আলম ব্যাপারী প্রতি মাসে একটা মাসহারা পাঠিয়ে দেন। আর যাই হোক, তার বদৌলতে আজ তার এতো ধন,সম্পদ, প্রতিপত্তি। তা ছাড়া তিনি বলেই রেখেছেন, কখন কোন দরকার হলে তার সাথে যোগাযোগ করতে যেন দ্বিধা না করে।

প্রাক্তন মন্ত্রী জানে আলম ব্যাপারীর কথা খুব মন দিয়ে শুনলেন। তিনি বললেন, আমার প্রথম থেকেই মনে হয়েছিল তোমার এই সমস্যাটা হতে পারে। তোমার মধ্যে কোথায় যেন একটা ভাল মানুষ ভাল মানুষ ভাব আছে। তার পরে আলোচনা চলতে থাকল কি করা যায়। এই প্ল্যান সেই প্ল্যান করতে অনেক কিছুই নিয়ে কথা। একটা ফুটবল টিম কিংবা ক্রিকেট টিম বানান থেকে আরম্ভ করে একটা এতিমখানা বানানো নিয়ে পুঙ্খানাপুঙ্খু পরীক্ষা করা হল। কোনটাই শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকলো না। জানে আলম হতাশ হয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বললেন, কিছু একটা বের করতেই হবে।

চিন্তা করতে করতে দু জনেরই মাথা গরম হয়ে গেল। তারা হাটতে বের হলেন গ্রামে মেঠো পথ ধরে। কিছু দূর যেয়ে দেখলেন, গ্রামের ছোট ছেলে মেয়েরা মিলে ‘ওপেনটি বায়োস্কোপ’ দেখছে। আইডিয়া খেলে গেল মন্ত্রী সাহেবের মাথায়। তিনি চিৎকার করে বললেন, ইউরেকা, ইউরেকা। পেয়ে গেছি। তোমাকে বায়োস্কোপ বানাতে হবে। তবে তোমাকে বড় পর্দার না, ছোট পর্দার মানে টিভির জন্যে বায়োস্কোপ, মানে প্যাকেজ নাটক বানাতে হবে। বাঙালী খূব সংস্কৃতি প্রেমী। দেখনা একুশে ফেব্রুয়ারি আর পহেলা বৈশাখে কেমন ভিড় করে। একবার তোমার নাটক হিট হয়ে গেলে, দেখ তোমার কেমন সুখ্যাতি ছড়িয়ে পরে। তোমার বৌ পর্যন্ত মনে রাখবে নাঃ তুমি এক দিন তাকে এক বিয়ে বাড়ীর আসর থেকে তুলে নিয়ে এসেছিলে।

কথাটা শুনে জানে আলম ঢোক গিলে বললেন, জ্বী, আমি বানাবো নাটক? আমি জীবনে একটা গল্পের বই পর্যন্ত পড়ে দেখি নি। তা ছাড়া আমার কখন টিভি দেখার সময়? এর পরে মন্ত্রী সাহেব জানে আলমের কানে কানে ফিস ফিস করে অনেক শলা পরামর্শ দিলেন। শেষে বেশ জোড়েই একটা কথা বললেন, তোমার আমাদের এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কথা মনে নাই? উনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে কিংবা পরে কবিতা লিখেছেন বলে শোনা যায় না। ব্যাপারটা বুঝতেই পারছ। তার ছিল ক্ষমতা। আর তোমার আছে টাকা। তবে খুব সাবধান কেও যেন জানতে না পারে।

কথাটা শেষ হতে না হতেই, জানে আলম ব্যাপারীর নিজে নিজে মুখে হাসি চলে আসলো। বিগলিত হয়ে মন্ত্রীকে বললেন, আপনি আমার জীবন বাঁচালেন। আপনি আমার আসল ওস্তাদ। এর পর থেকে তার মুখে হাসিটা যেন চিরস্থায়ী ভাবে লেগে গেল।

জানে আলম ঢাকায় এসে অফিসে ফোন করে বললেন, আগামী তিন দিন তিনি অফিসে যাবেন না। আর তাকেও যেন কেও ফোন করে, বিরক্ত না করে। এর পরে তিনি প্রতিটা চ্যানেলের প্রতিটা প্যাকেজ নাটক দেখতে লাগলেন। কাজটা আরম্ভ করার আগে বিষয়টা নিয়ে কিছু ধারণা থাকলে ভালো হয়।

নাটক দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। না আছে ঘটনা, না আছে কোন গল্প। আছে কাতু কুতু দিয়ে হাসানোর আপ্রাণ চেষ্টা। যে যার মত আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছে, হচ্ছে কি না হচ্ছে তা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নাই। তাদের হয়তো ধারণা; এইটা দেখে, মানুষজন হাসতে হাসতে অস্থির হয়ে যাচ্ছে। বিরক্তি , চরম পর্যায়ে যেয়ে পৌছালো। পাবলিক কি আসলেও এগুলো হজম করে? নাটক বানিয়ে কি আসলেও নিজের ইমেজ পরিবর্তন করা যাবে? যাই হোক চেষ্টা একবার করেই দেখতে হবে। বিশেষত মন্ত্রী সাহেব যখন বুদ্ধিটা দিয়েছেন।

জানে আলম ব্যাপারী মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো। তিনি নাটক বানাবেন, কিন্তু তাতে গল্প থাকবে। তার নিজের জীবনের সব ঘটনা। তিনি কাগজ কলম নিয়ে লিখতে বসলেন। মাথার মধ্যে অনেক ঘটনা আসলো, তবে কলম দিয়ে কিছু বের হল না। তার মনে আসল না, তিনি শেষ কবে কাগজ-কলম দিয়ে লিখেছিলেন। ক্লাশ নাইনে পড়ার সময় একবার মা কে চিঠি লেখার কথা মনে আসলো। অনেক চেষ্টা করেও যখন একটা অক্ষর বের হল না, তখন রাগ করে কাগজটা কুটি কুটি করে ছিড়ে, কলমটা ছূড়ে ফেলে দিলেন।

না বিষয়টা ছেড়ে দিলে হবে না। কাজটা করতেই হবে। বৌ, বাচ্চার ভালোবাসা ছাড়া কি মানুষ বাঁচতে পারে? কলম থেকে কিছু বের হল না। কি করা যায়, কি করা যায়? মনে আসলো মন্ত্রী সাহেবের কথা, .........তোমার আছে টাকা। কিন্তু তার গল্প কি লিখে দিবে নাটক বানানোর জন্যে।

মাথায় আসলো বারেকের কথা।

তুলতুলে মেয়ে তূলির প্রাইভেট টিউটর বারেক। লম্বা, শুকনো, কালো, মাথা ভর্তি কোঁকড়া চূল; ছোট করে কাটা। বন্ধুরা তাকে বারেক ওবামা বলে ডাকে। কথাটা এ কান, ও কান করে জানে আলমের কান পর্যন্ত এসেছে। অফিসের রহমত সাহেবের শালা। সেই তাকে ঠিক করে দিয়েছে তুলিকে পড়ানোর জন্যে। এও শুনেছেন, ছেলেটা নাটক করে, কবিতা লিখে।

জানে আলমের চোখ এড়ায় নি বারেককে দেখলে তূলির চোখ কেমন জ্বলজ্বল করে উঠে। একদিন দরজা থেকে বিদায় করে বারেকেরও রিএকশান পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন। আজকে পড়ানোর দরকার নাই। আমি তুলিকে নিয়ে বাইরে যাব। কথাটা শোনা মাত্র বারেক ওবামার কালো মুখ বিষাদে ভড়ে গিয়েছিল।

জানে আলম একেবারে নিশ্চিত ছিলেন, বারেক নিঃসন্দেহে তার প্রস্তাবে রাজী হবে। টাকা, চাকরীর আশ্বাস দিলেন। তূলির কথাও পরোক্ষভাবে বললেন। ছেলেটা কিনা বলে, সংস্কৃতিতে কেনা বেচা চলতে পারে না। সংস্কৃতি হল একটা অঙ্গীকার, মানুষকে সুন্দর জীবন প্রদর্শনের সব চেয়ে বড় হাতিয়ার। এটা নাম কামানোর কিংবা অর্থহীন সময় নষ্ট করার কোন মাধ্যম হতে পারে না। একুশের শহীদরা রক্ত দেয় নি সংস্কৃতি নিয়ে বেলেল্লেপনা করার জন্যে।

কঠিন সিদ্ধান্ত জানে আলমকে নিতে হল। তার প্যাকেজ নাটক বানানো হবে গল্প ছাড়াই। অন্যদের নাটকদের মতই লাফালাফি করে দর্শকদের হাসানো হবে, আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে। কিন্তু পার্থক্য একটা থাকবে। তার নাটকের চরিত্রগুলোকে আনা হবে বাংলাদেশের চৌষট্টি জেলা থেকে। তারা ক্যামেরার সামনে এসে যা মন চায় তাই বলবে তাদের নিজস্ব অঞ্চলের ভাষায় আর কিছুক্ষণ পর পর এ ওর গায়ে লাফ দিয়ে পড়বে। পাবলিক দেখে হেসেই খুন হয়ে যাবে।

আর জানে আলম পাবেন সাধের সুখ্যাতি আর বৌ,মেয়ের ভালোবাসা।

কাজী হাসান

www.lekhalekhi.net